সাফল্যের গল্প: ওপেনএআই এর ‘চ্যাটজিপিটি’

সাফল্যের গল্প: ওপেনএআই এর ‘চ্যাটজিপিটি’


সম্প্রতি ইন্টারনেট জগতে আলোচনায় এসেছে ‘চ্যাটজিপিটি’, যার পূর্ণরূপ হল ‘চ্যাট জেনারেটিভ প্রি-ট্রেইনড ট্রান্সফর্মার’ (Chat Generative Pre-trained Transformer; ChatGPT)। 

সম্প্রতি ইন্টারনেট জগতে আলোচনায় এসেছে ‘চ্যাটজিপিটি’, যার পূর্ণরূপ হল ‘চ্যাট জেনারেটিভ প্রি-ট্রেইনড ট্রান্সফর্মার’ (Chat Generative Pre-trained Transformer; ChatGPT)
Success-Story-Of-ChatGPT

ChatGPT নাম থেকেই বোঝা যাচ্ছে, জনপ্রিয় এই টুল এর সাথে চ্যাট বা কথোপকথন করা যায়। মূলত সেজন্যই চ্যাটজিপিটি’কে বিশেষভাবে প্রশিক্ষণ বা ট্রেনিং দেয়া হয়েছে। ফলে যেকোনো প্রশ্ন করা হলে অনেকটা মানুষের মত উত্তর দিতে পারে এআই নির্ভর এই টুল। 

তবে বর্তমানে বিভিন্ন কাজে সাধারণ যেসব চ্যাটবট ব্যবহার করা হয়, তার তুলনায় চ্যাটজিপিটি অনেক উন্নত। যেমন, প্রশ্নের উত্তর দেয়ার পাশাপাশি সৃজনশীল কিছু রচনা করতে বলা হলেও তা করতে পারে চ্যাটজিপিটি। 

এখন অনেকেই গানের লিরিক্স, প্রবন্ধ, সংবাদ প্রতিবেদন কিংবা টিভি এপিসোড এর স্ক্রিপ্ট থেকে শুরু করে নানান ধরনের কন্টেন্ট রচনা করাচ্ছে চ্যাটজিপিটি দিয়ে। লিখিত আকারে এ ধরনের বিভিন্ন কন্টেন্ট বা তথ্য পাওয়ার জন্য চ্যাটজিপিটি’কে শুধু সঠিক এবং সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দিতে হয়। 

যেমন ‘চ্যাটজিপিটি’কে শুধু গোয়েন্দা গল্প লিখতে বলা হলে যেকোনো ধরনের বা যেকোনো সময়ের ওপর ভিত্তি করে গল্পের প্লট তৈরি করবে। তুলনায় যদি চ্যাটজিপিটিকে জনপ্রিয় গোয়েন্দা চরিত্র শার্লক হোমস এর আদলে গল্প লিখতে বলা হয়, তাহলে তেমন একটি গল্পই রচনা করবে। আবার যদি ভবিষ্যতের দুনিয়ায়, অর্থাৎ ধরা যাক আজ থেকে ১০০ বছর পরের পৃথিবীতে শার্লক হোমস’কে নিয়ে গল্প লিখতে বলা হয়, চ্যাটজিপিটি সেটাও পারবে। মোটকথা, এ ধরনের একটা টুল এর সম্ভাবনা অনেক। 

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই যে মানুষের মত করেই সৃজনশীল অনেক কাজ করতে পারে, তা চ্যাটজিপিটি’র মাধ্যমেই অনেক মানুষ প্রথমবারের মত উপলব্ধি করেছে। ফলে এই চ্যাটবট যারা তৈরি করেছে, সেই ‘ওপেনএআই’ (OpenAI) নামের কোম্পানি এখন প্রথম সারির প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান হিসেবে জায়গা করে নিচ্ছে। 

ওপেনএআই’তে ১০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করতে যাচ্ছে মাইক্রোসফট। মাইক্রোসফট আশা করছে, তারা চ্যাটজিপিটিকে কাজে লাগিয়ে নিজেদের ব্রাউজার ‘বিং’ (Bing) এবং তাদের জনপ্রিয় প্রডাক্ট ‘মাইক্রোসফট অফিস স্যুট’কে আরো উন্নত করতে পারবে।

কিন্ত ওপেনএআই এর সামনে এখনো রয়েছে কঠিন সব চ্যালেঞ্জ। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে চ্যাটজিপিটিকে আরো নির্ভুল, পক্ষপাতমুক্ত এবং ত্রুটিমুক্ত করে তোলা।
 
তবে প্রতিষ্ঠান হিসেবে ওপেনএআই কীভাবে এতদূর এলো? বর্তমানে প্রযুক্তি বিশ্বে তাদের প্রভাবই বা কেমন? এসব প্রশ্নের উত্তর খোঁজার মধ্য দিয়ে জেনে নেয়া যাক ওপেনএআই এর সফলতার গল্প।

ওপেনএআই এর ইতিহাস


২০১৫ সালে সান ফ্রান্সিসকো ভিত্তিক একটি অলাভজনক ‘আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ল্যাবরেটরি’ হিসেবে যাত্রা শুরু করে ওপেনএআই। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে গবেষণা করার মাধ্যমে ‘আর্টিফিশিয়াল জেনারেল ইন্টেলিজেন্স’ বা ‘এজিআই’ তৈরি করা ছিল তাদের উদ্দেশ্য। মূলত ‘এজিআই’ হল এমন এক ধরনের সক্ষমতা, যার মাধ্যমে মানুষের মত করেই বুদ্ধিবৃত্তিক কাজ বুঝতে বা শিখতে পারে এআই। সহজ কথায়, তাদের উদ্দেশ্য ছিল এমন সফটওয়্যার তৈরি করা, যেটা মানুষের মতই স্মার্ট হবে। 

প্রতিষ্ঠার সময় ওপেনএআই এর লক্ষ্য ছিল যাতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মত সম্ভাবনাময় প্রযুক্তি একচেটিয়াভাবে গুগল এর মত বড় কোনো প্রতিষ্ঠানের দখলে চলে না যায়। অর্থাৎ, এআই প্রযুক্তি উন্নত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এর সুবিধা যাতে সবাই ভোগ করতে পারে, সেই লক্ষ্যেই যাত্রা শুরু করে ওপেনএআই। অলাভজনক এই প্রজেক্ট এর মাধ্যমে এর প্রতিষ্ঠাতারা চাচ্ছিলেন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নির্ভর একটি সফটওয়্যার তৈরি করে সেটা ওপেন সোর্স করে দিতে, যাতে পৃথিবীর যে কেউই চাইলে এই সফটওয়্যার থেকে উপকৃত হতে পারে।

শুরুতে সিলিকন ভ্যালির উল্লেখযোগ্য অনেক ব্যক্তি মিলে ওপেনএআই’তে ১ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দেন। এর মধ্যে ছিলেন টেসলা ও স্পেসএক্স এর প্রতিষ্ঠাতা ইলন মাস্ক, ভেঞ্চার ক্যাপিটালিস্ট পিটার থিয়েল এবং স্যাম অল্টম্যান, যিনি পরবর্তীতে ২০১৯ সালে ওপেনএআই এর সিইও হন।

২০১৮ সালে টেসলা এবং স্পেসএক্স নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ার কারণ দেখিয়ে পরিচালনা পর্ষদ ছেড়ে চলে যান ইলন মাস্ক।

এআই সফটওয়্যার তৈরি করতে গিয়ে খুব জটিল এক পথে পা বাড়ায় ওপেনএআই। অবিশ্বাস্য রকমের বিশাল পরিমাণ ডেটা এবং শক্তিশালী নিউরাল নেটওয়ার্ক ব্যবহার করতে হয় তাদের। আর এই নিউরাল নেটওয়ার্ক হলো মূলত এমন সফটওয়্যার, যার কাঠামো অনেকটা মানুষের মস্তিষ্কের নিউরনের সাথে মিল রেখে তৈরি করা হয়েছে। কিন্ত এর জন্য প্রয়োজন হয় প্রচুর পরিমাণ কম্পিউটিং পাওয়ার বা উচ্চ ক্ষমতার কম্পিউটার এবং অত্যন্ত কর্মদক্ষ জনবল। এতে খরচও হয় অনেক বেশি। যেমন ২০১৬ সালের ট্যাক্স রেকর্ড থেকে দেখা যায় প্রথম দিকে ওপেনএআই এ কাজ করা কোনো এক কর্মীর বেতন ছিল ১.৯ মিলিয়ন ডলার। এসব কারণে প্রতিষ্ঠানটি অলাভজনক হিসেবে চালানো কঠিন হয়ে পড়ে।

তাই ২০১৯ সালে ওপেনএআই লাভজনক বা ‘ফর-প্রফিট’ কোম্পানি হিসেবে নিজেদের কৌশলে পরিবর্তন আনে। প্রতিষ্ঠানের কাঠামো অন্যরকম ভাবে ঢেলে সাজানো হয়। আর বিনিয়োগকারীদের প্রতিশ্রুতি দেয়া হয় যে, তারা নির্দিষ্ট সময়ের পর নিজেদের বিনিয়োগের কয়েক গুণ অর্থ ফেরত পাবেন। অল্টম্যান মাইক্রোসফট থেকেও ১ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ গ্রহণ করেন। বিনিময়ে ওপেনএআই এর কিছু প্রযুক্তি লাইসেন্স করে বাণিজ্যিকভাবে বাজারে আনার অধিকার পায় মাইক্রোসফট।

ওপেনএআই এর বিভিন্ন কাজ


ওপেনএআই এর মূলে রয়েছে এমন একটা সিস্টেম, যেটা মানুষের ভাষা বুঝতে পারে। এজন্য এর ইঞ্জিনিয়াররা ইন্টারনেটে থাকা লিখিত তথ্যের বিশাল ভাণ্ডারের সাহায্য নিয়েছেন, যেখান থেকে সফটওয়্যারটি ভাষার ব্যবহার শিখেছে। 

২০২০ সালে তারা ‘জিপিটি-৩’ নামের একটি টুল তৈরি করে, যেটা নির্দেশনা অনুযায়ী এমনভাবে লেখা তৈরি করতে পারে, যা বিশ্বাসযোগ্য এবং যুক্তিসঙ্গত বলে মনে হয়। জিপিটি-৩ এর এই সাফল্য থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে এই সফটওয়্যারকে কম্পিউটার কোড শেখানো শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি। এভাবে ‘কোডেক্স’ নামের একটি টুল বানায় ওপেনএআই। মূলত কোডেক্স এর কাজ হচ্ছে প্রোগ্রামারদের দ্রুতগতিতে কোড লিখতে সাহায্য করা। 

কোডেক্স এর সাফল্য থেকেই আবার ‘কো-পাইলট’ নামের সবার জন্য উন্মুক্ত আরেকটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি হয়। প্রতি মাসে নির্দিষ্ট অর্থ পরিশোধ করলে এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে মানুষের লেখার ভাষায় দেয়া স্বাভাবিক নির্দেশনাকে কম্পিউটার কোডে রূপান্তর করা যায়। ‘কো-পাইলট’ মূলত ‘গিটহাব’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের প্ল্যাটফর্ম। আর ‘গিটহাব’ হল মাইক্রোসফট এর মালিকানায় থাকা একটি প্রতিষ্ঠান।

ভাষার সাথে দৃশ্য বা ছবির সংযোগ নিয়েও কাজ করেছে ওপেনএআই। এজন্য ‘জিপিটি-৩’কে এমন ভাবে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে যাতে প্রোগ্রামটি শব্দ এবং ছবির মধ্যে প্যাটার্ন খুঁজে পায়। ইন্টারনেট থেকে অসংখ্য ছবি এবং ছবির ক্যাপশন ব্যবহার করে ‘জিপিটি-৩’কে প্রশিক্ষিত করা হয়েছে। এই প্রচেষ্টার ফলাফল হিসেবে ২০২১ এর জানুয়ারিতে ‘ডাল-ই’ (DALL-E) নামের একটি বিশেষ টুল উন্মুক্ত করে ওপেনএআই, যেটা মানুষের লেখা বুঝে সেই অনুসারে ছবি তৈরি করতে পারত।

এর কিছু দিন পর উন্মুক্ত করা হয় ‘ডাল-ই ২’ (DALL-E 2)। প্রথম সংস্করণের তুলনায় এই প্রোগ্রামটি আরো বেশি বাস্তবসম্মত ছবি তৈরি করতে পারে।

গত বছর, অর্থাৎ ২০২২ সালে ‘ডাল-ই ২’ সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়ার পরে খুব দ্রুতই সবার নজর কাড়ে এই টুল। বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে ভাইরাল হয়ে যায় ‘ডাল-ই ২’। মানুষ অবাস্তব সব নির্দেশনা দিয়ে ছবি বানাতে থাকে এই টুল দিয়ে। যেমন মহাকাশে একটা শিকারি কুকুরের ছবি কাচের ওপর আঁকলে কেমন দেখাবে, সেই নির্দেশনা দেয়ার পরে ঠিক তেমন একটা হাই-কোয়ালিটির ছবি মুহূর্তেই বানিয়ে ফেলতে পারছে ‘ডাল-ই ২’। জনসাধারণ ব্যক্তিগতভাবে নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা পরিশোধ করে এই টুল ব্যবহার করতে পারে। এছাড়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানও অর্থের বিনিময়ে তাদের অ্যাপে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারছে।

এরপর ২০২২ সালের নভেম্বরে ওপেনএআই উন্মুক্ত করে চ্যাটজিপিটি। চ্যাটবটটি এর আগের সব সংস্করণের চেয়েও সূক্ষ্ম এবং উন্নত। অনেকটা মানুষের মত করে লিখতে পারে বলে এটি দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। চ্যাটজিপিটি ধর্মের মত জটিল সব বিষয় নিয়ে কথা বলতে পারে, প্রবন্ধ লিখতে পারে, আবার কবিতা বা কম্পিউটার কোডও লিখে দিতে পারে। 

অবশ্য অনেক সহজ তথ্যও ভুল করে বসে এই চ্যাটবট। অনেক প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে বর্ণবাদী ও লিঙ্গবৈষম্যমূলক লেখা লিখেছে চ্যাটজিপিটি। এবং তা নিয়ে সমালোচনাও হয়েছে অনেক। এছাড়াও শিক্ষার্থীরা এই টুল ব্যবহার করে তাদের অ্যাসাইনমেন্ট করিয়ে নিতে পারে, এই আশঙ্কাও করেছেন অনেকে। 

এ বছর, অর্থাৎ ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে প্রায় ১০০ মিলিয়ন মানুষ সক্রিয়ভাবে ব্যবহার করেছে চ্যাটজিপিটি।

চ্যাটজিপিটি নিয়ে মানুষের আগ্রহের কারণ এবং এ নিয়ে সিলিকন ভ্যালির ভাবনা


চ্যাটজিপিটি’র আবির্ভাব যেন হঠাৎ করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ক্ষেত্রে বিশাল এক অগ্রগতি। অন্তত এমন ধারণাই তৈরি হয়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। নির্দেশনা অনুসারে সৃজনশীল ছবি বা লেখা তৈরি করার মাধ্যমে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই এর এমন ব্যবহার অনেকের মনেই চমক জাগিয়েছে।

প্রযুক্তি ক্ষেত্রের কিছু বিশেষজ্ঞের মতে, চ্যাটজিপিটি আসার পর সাংবাদিক এবং চিত্রনাট্যকারদের মত বেশ কয়েক ধরনের পেশাজীবিদের ভবিষ্যৎ হুমকির মধ্যে পড়তে পারে। তবে সংবাদ লেখার সময় চ্যাটজিপিটি’র মারাত্মক কিছু ভুল করায় এর সক্ষমতা নিয়ে এখনো অনেকে সন্দেহের মধ্যে আছেন। 

সিলিকন ভ্যালি অবশ্য এই অগ্রগতিকে ঠিক নতুন কিছু বলছে না। মেটা এবং গুগল এর মত বড় বড় টেক কোম্পানি একই ধরনের প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করে আসছে। এ ধরনের কিছু প্রযুক্তি তারা সীমিত মাত্রায় উন্মুক্ত করেছে। আবার আরো কিছু প্রযুক্তি বাজারে আনার পরে সমস্যা দেখা দেওয়ায় সেগুলি সরিয়ে নিয়েছে। 

তবে ওপেনআই এর কৌশল অনুসারে চ্যাটজিপিটি এখন বিশ্বজুড়ে লক্ষ লক্ষ মানুষ ব্যবহার করতে পারছে। আর এতে ভুল বা পক্ষপাতমূলক তথ্য ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি থাকলেও সাধারণ মানুষ খুব সহজেই এআই সফটওয়্যার ব্যবহার করতে পেরেছে।

এদিকে চ্যাটজিপিটি নিয়ে মানুষের আগ্রহ অনেক বেড়ে যাওয়াতে গুগল এবং মেটা’র মত প্রতিষ্ঠান তাদের নিজেদের এআই প্রডাক্ট বাজারে আনার প্রতিযোগিতায় নেমে পড়েছে। সবচেয়ে কম সময়ের মধ্যে মানুষের ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত করাটাই এখন তাদের লক্ষ্য। সম্প্রতি গুগল তাদের এআই প্রডাক্ট ‘বার্ড’ (Bard) উন্মুক্ত করেছে, যেটা অনেকটা চ্যাটজিপিটি’র মতই কাজ করে। 

ওপেনএআই এর পাশাপাশি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ক্ষেত্রে বড় পরিসরে কাজ করছে আরো যারা


প্রযুক্তি ক্ষেত্রের অনেক প্রতিষ্ঠানই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে কাজ করছে। গুগল শুরুর দিকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে কাজ শুরু করে। তাদের কাজের কিছু অংশও ছিল চ্যাটজিপিটি'র কার্যক্রমের মত। সে সময়ে গুগল 'ল্যামডা' (LaMDA) নামে একটি ল্যাংগুয়েজ মডেল তৈরি করেছিল। আর গুগলের একজন সাবেক প্রকৌশলী দাবd করেছিলেন এই ল্যাংগুয়েজ মডেলেরও মানুষের মত অনুভূতি আছে। 

আবার ওপেনএআই এর ডাল-ই যেভাবে কাজ করে, সেভাবে কাজ করা নিজেদের সংস্করণ বের করেছে 'স্টেবল ডিফিউশন' নামের একটি স্টার্টআপ। তবে এই প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারের নীতিমালা ওপেনএআই এর তুলনায় অনেক শিথিল। 

আবার গত বছরই মিডজার্নি নামের একটি রিসার্চ ল্যাব 'টেক্সট টু ইমেজ', অর্থাৎ লেখা থেকে ছবি বানানোর প্রোগ্রাম তৈরি করেছে। গত বছরের আগস্টে 'কলোরাডো স্টেট ফেয়ার'-এ অনুষ্ঠিত এক চিত্রকর্ম প্রতিযোগিতায় মিডজার্নি দিয়ে তৈরি করা একটি শিল্পকর্ম পুরস্কার জেতে। তখন এই ঘটনা নিয়ে বেশ বিতর্কের সৃষ্টি হয়।

আবার, গত বছরের নভেম্বরে মেটা বাজারে আনে ‘গ্যালাকটিকা’ নামের তাদের এআই টুল। তবে এর ত্রুটি নিয়ে সমালোচনা হওয়ায় উন্মুক্ত করার ৩ দিনের মধ্যেই সরিয়ে ফেলা হয় গ্যালাকটিকা। তারও কয়েক মাস আগে 'ব্লেন্ডারবট ৩' নামে আরেকটি চ্যাটবট উন্মুক্ত করে মেটা। এই চ্যাটবট এর বিরুদ্ধেও বর্ণবাদী মন্তব্য করার অভিযোগ রয়েছে। আবার ২০১৬ সালে মাইক্রোসফট এর চ্যাটবট 'টে' (Tay) বাজারে আনার একদিনের মধ্যেই বর্ণবাদী মন্তব্যের অভিযোগে সরিয়ে নেয়া হয়। 

চ্যাটজিপিটি, ওপেনএআই, চ্যাটবট
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url